নেত্রকোনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অধীন নেত্রকোনা-হাটখলা সড়ক সংস্কারের অভাবে বেহালদশা বিরাজ করছে। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। সংস্কার কাজ শুরু করেও স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীদের বাধার মূখে তা বন্ধ রয়েছে।এতে করে এলাকাবাসীর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,নেত্রকোনা পৌরসভার সাতপাই চানখাঁর মোড় থেকে হাটখলা পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বেহালদশা বিরাজ করছে। এই সড়ক দিয়ে জেলা সদর, পূর্বধলা, হাটখলা, মৌগাতীসহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেটে ও বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করে। হাটখলা এ এলাকার বড় ধানের বাজার। ওই বাজারে পূর্বধলা ও সদর উপজেলার মৌগাতী, রৌহা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান ওই বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যান। সড়কের বেহালদশার কারনে তাদেরকে বাজারে ধান নিয়ে বিক্রি করতে খুব কষ্ট হয়। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ন অবস্থার মধ্য দিয়ে এলাকাবাসীকে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পানি জমে থাকে। এতে করে পথচারী ও যানবাহন চলাচল করতে খুবই অসুবিধের সৃষ্টি হয়। প্রায় সময়ই রাস্তায় ওই সমস্ত গর্তে যানবাহন আটকে যায়। প্রসুতীসহ জরুরী রোগীদের ওই সড়ক দিয়ে আনা নেয়ার ক্ষেত্রে খুবই কষ্ট হয়।
সরেজমিনে ওই সড়কের কুনিয়া, সাতপাই, বর্ষিকুড়া, কা নপুর, গরদী, হাটখলা, ফাইস্কা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত। সড়কের ইট সুরকি উঠে গেছে। ওই সমস্ত গর্তে পানি জমে রয়েছে। আবার কোথাও কাদায় পরিপূর্ন। গর্তে অটো রিকশা, পিকাপ, সিএনজি প্রায়ই আটকে থাকে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা পৌর সভার সাতপাই চানখাঁর মোড় থেকে মৌগাতী ইউনিয়নের হাটখলা পর্যন্ত ২ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য গত ২ জানুয়ারী দরপত্র আহ্বান করা হয়। কার্যাদেশ দেয়া হয় গত ২৬ ফেব্রুয়ারী। কাজ শেষ করার কথা জুন মাসের মধ্যে। ঠিকাদার যথাসময়ে কাজ শুরু করেন। হাটখলা বাজারের একাধিক ধান ব্যবসায়ী সংস্কার কাজে বাধার সৃষ্টি করেন। তাদের বাধার মূখে ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ করতে হয়। এর পর করোনা ও বৃষ্টির কারনে কাজ কিছুটা বিলম্ব হয়।
কুনিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তার জন্য আমাদের খুব কষ্ট হয়। সামান্য বৃস্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায়। ধান চাল বাজারে নিতে পারি না। এ জন্য আমরা দামও কম পাই। জেলা সদরের একটি গুরুত্বপূর্ন রাস্তা ঠিক করা হয় না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। নির্বাচনের সময় হলে এমপি ও চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দেয় সড়কটি সংস্কারের। নির্বাচন শেষ হলে আর তাদেরও দেখা মিলেনা।
নেত্রকোনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন,হাটখলা বাজারের ধান ব্যবসায়ীদের বাধার কারনে ঠিকাদার যথা সময়ে কাজ করতে পারেননি। এ ছাড়া করোনা ও বৃষ্টির কারনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে ঠিকাদারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।