Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ চীনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে চায় বাংলাদেশ ■ এফটিএক্স প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ব্যাংকম্যানের ২৫ বছর কারাদণ্ড ■ ইডি হেফাজতে আরও ৪ দিন কেজরিওয়াল ■ মাধ্যমিকে কমেছে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ■ দুঃসময় চলছে, সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন: ফখরুল ■ ইউনূস সেন্টার মিথ্যাচার করেছে, অভিযোগ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ■ ‘নির্বাচনে কোটি টাকা খরচ করেছি, এতটুকু অনিয়ম তো করবোই’
মির্জা ফখরুল-রিজভী দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত বিএনপি!
Published : Sunday, 26 July, 2020 at 10:05 AM, Update: 26.07.2020 2:35:38 PM

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভী আহমেদ

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভী আহমেদ

প্রাত্যহিক কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিমুখিতা, দলে প্রভাব বিস্তারসহ সাংগঠনিক দ্বন্দ্বে বিএনপিতে বিভক্তি সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নেতারা পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন শীতল যুদ্ধে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নির্দেশ পাশ কাটিয়ে বিশেষ ক্ষমতাবলে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ নিজের মতো করে দলের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন— এমন অভিযোগও বেশ স্পষ্ট।

সূত্র জানায়, গত ২৭ জুন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন রিজভী আহমেদ। তিনি জানান, করোনা মহামারিকালেও নেতারা মাঠে নেই। দলের কোনো কাজে তারা মাঠে নামতে চান না। তিনি একাই ত্রাণ বিতরণ, নিয়ম করে দলের প্রতিক্রিয়া জনগণের সামনে তুলে ধরেন। সাংগঠনিভাবে দলকে চাঙ্গা করতে কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ এসব কার্যক্রমের সমালোচনা করছেন নেতারা।

‘এমনকি কোনো কোনো নেতা সরকারের সঙ্গে লবিং করে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রেখে রাজার হালে চলছেন’— অভিযোগ রিজভীর।

জানা গেছে, দলের দুই শীর্ষ নেতার দ্বন্দ্ব বেশ পুরোনো হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ফের নতুন করে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। দলে জোর গুঞ্জন রয়েছে, মির্জা ফখরুল কাগজে-কলমে মহাসচিব হলেও দলের সব কার্যক্রম পরিচালনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে একচ্ছত্র প্রভাব খাটাচ্ছেন রিজভী আহমেদ। সারাদেশের বিএনপির রাজনীতিকে এক হাতে নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। তার ইশারা ছাড়া কোথাও কোনো কমিটির অনুমোদন হয় না। দলের মহাসচিব হওয়ার প্রবল ইচ্ছা থেকেই বর্তমান মহাসচিবকে নিষ্ক্রিয় প্রমাণ করতে অনেক কাজ তিনি নিজ দায়িত্বেও করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মূলত খালেদা জিয়ার পরামর্শে কাজ করেন। অন্যদিকে ধীর বুদ্ধিসম্পন্ন নেতা হওয়ায় ফখরুলও বিষয়গুলো চেপে যান। তবে মাঝে মাঝে এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাকে।

অভিযোগ উঠেছে, দলীয় গঠনতন্ত্র ও করোনাকালীন সাংগঠনিক বিধিনিষেধ এবং মানবিক দিক অমান্য করে গত ২২ জুন ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদকের শূন্যপদে উত্তরের সহ-সভাপতি আবদুল আলীকে বসান রিজভী আহমেদ। অথচ তার ওই সিদ্ধান্তের কথা জানতেন না মির্জা ফখরুলসহ সিনিয়র নেতারা। শুধু তা-ই নয়, ২৩ জুন উত্তরের নতুন সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রিজভী।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান বলেন, করোনাকালীন বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকলেও ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটিতে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নিযুক্ত করা হয়েছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অন্ধকারে রেখে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে এই কাজ করেন। যদিও রিজভী আহমেদের বক্তব্য স্পষ্ট, দলের গঠনতন্ত্র মেনেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভী আহমেদ

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভী আহমেদ


গত ২ জুলাই ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পাস এবং নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক সময়ের প্রস্তাবনার প্রতিক্রিয়া জানাতে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার লিখিত বক্তব্য শেষে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ফখরুল ইসলামকে প্রশ্ন করেন, এই যে আপনি সংবাদ সম্মেলন করছেন, ব্যাপারটা কি ম্যাডাম জিয়া জানেন?

ভার্চুয়াল ওই সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নে সবাই বিব্রত হয়েছেন বলে জানান বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

সাংবাদিক (১) : আমরা শুনেছি এবং বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, আপনার সাথে রিজভী সাহেবের একটা দ্বন্দ্ব চলছে, ঘটনাটা কতটুকু সত্য?

মির্জা ফখরুল : এই ধরনের প্রশ্ন আপনার এই মুহূর্তে করাটা ঠিক হয়নি। আপনি আমাকে অন্য একটা অকেশনে করতে পারতেন। আমার সঙ্গে দলের কারও দ্বন্দ্ব নেই। আপনারা অযথাই দলের খবর কোথায় পান…। আমি ঠিক জানি না। এটাও একটা প্রশ্ন, যে প্রশ্নটা কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে কিছুটা মিল আছে।

সাংবাদিক (২) : আপনি যে প্রেস কনফারেন্স করছেন, ম্যাডাম জিয়া কি জানেন ব্যাপারটা?

মির্জা ফখরুল : আপনি এটা…। আমার প্রেস কনফারেন্সটাই ছিল মুখ্য। ম্যাডাম জিয়া আমাদের দলের চেয়ারপারসন। তিনি না জানলে তো অন্য কারও জানার কথা নয়। তিনি অবশ্যই জানেন।

এ সময় অপর এক সংবাদকর্মী মির্জা ফখরুলের কাছে খালেদা জিয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাইলে ফখরুল বলেন, বাজেট এবং নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবের বাইরে এখানে অন্য কোনো প্রশ্ন নয়। অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে দিনক্ষণ ঠিক করা যেতে পারে।

সাংবাদিক (১) : মাননীয় মহাসচিব তাহলে আপনি কি বলতে চাইছেন, এই বাজেট বিএনপির ঈদের পরের আন্দোলনের মতো হয়েছে? ঈদের পরে আন্দোলন, ঈদের পরে আন্দোলন, ঈদের পরে আন্দোলন যেমন বাস্তবায়ন হয় নাই, তেমনি বাজেটও বাস্তবায়ন হবে না।

মির্জা ফখরুল : আপনি কে বলছেন ভাই? আপনি কে বলছেন? আপনার নাম এবং পত্রিকার নাম জানলে আমার উত্তর দিতে সুবিধা হয়। পরিচয় দেন…

পরে এক অনলাইনের সংবাদকর্মী বলেন, মনে হয় উনি সংবাদকর্মী নন, উনি নাম-পরিচয় দিতে পারছেন না।

বিষয়টি নিয়ে শায়রুল কবির খান বলেন, ২ জুলাই বেলা ১১টায় মহাসচিবের ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর মূল বিষয়ের বাইরে আপত্তিজনক ও বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন করে ওই দুই সাংবাদিক অনলাইনে যুক্ত সব সাংবাদিককেই বিব্রত করছেন।

‘যদিও বিএনপি দলগতভাবে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করে। এ ব্যাপারে আগামীতে পরস্পর পরস্পরের সুবিধার জন্য ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে পেশাদারিত্ব ও একান্ত সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি’— বলেন শায়রুল কবির।

অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমার মনে হয়, কেউ হ্যাক করে আমাদের জুম মিটিংয়ে ঢুকে পড়েছিল। আমরা খবর নেয়ার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে কেউ যেন এভাবে ঢুকে না পড়ে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকব। কারণ এতে মূল ধারার যারা সাংবাদিক, তারা বিব্রত হন।’

ওই ঘটনায় দলটির একাংশের নেতাদের অভিযোগের তীর রিজভী আহমেদের দিকে। তাদের প্রশ্ন, মহাসচিবের সংবাদ সম্মেলনের পাসওয়ার্ড বাইরে যায় কীভাবে?

বিএনপির অনেকেই মনে করেন, শীর্ষ ওই দুই নেতার কারণে দলের মধ্যে দুটি কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। একটি গুলশান কার্যালয়, আরেকটি নয়াপল্টন কার্যালয়। ফলে কোনোরকম সমন্বয় ছাড়াই একই ইস্যুতে দুজন ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য করছেন। বিভ্রান্ত হচ্ছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এদিকে বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতারা রিজভী আহমেদের পক্ষে কথা বলছেন। তাদের মন্তব্য, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তাকে কারামুক্ত করতে মহাসচিব বা সিনিয়র কোনো নেতাই তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। বরং রিজভী আহমেদ খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত ছোটখাটো আন্দোলন টেনে নিয়ে গেছেন। এছাড়া করোনা সংকটের মধ্যেও তিনি একটি দিনের জন্যও ঘরে বসে থাকেননি। ত্রাণ দিতে রাজধানীর বাইরেও ছুটে গেছেন।

দলের দুই শীর্ষ নেতার মতানৈক্যের বিষয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতউল্লাহ বলেন, ওই দুই নেতা দলে গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। তাদের মতানৈক্যের কথা মাঝে মধ্যে প্রকাশ পায়, এটার বিষয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তা না হলে এর ফল ভোগ করতে হবে দলকে।

এ প্রসঙ্গে রিজভী আহমেদ বলেন, দলের মধ্যে নিঃসন্দেহে কোনো বিভেদ নেই। নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন। (জাগো)

দেশসংবাদ/জেএন/এফএইচ/mmh


আরও সংবাদ   বিষয়:  বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   রুহুল কবির রিজভী আহমেদ  


আপনার মতামত দিন
দুঃসময় চলছে, সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন: ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thursday, 28 March, 2024
বিএনপির ৮০ ভাগ নেতাকর্মী দমন-পীড়নের শিকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thursday, 28 March, 2024
হাসপাতালে নয়, বাড়িতেই থাকবেন খালেদা জিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thursday, 28 March, 2024
‘জনগণ দেশের মালিকানা হারিয়ে ফেলেছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক
Monday, 25 March, 2024
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক ও প্রকাশক
এম. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০/২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up