Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ ইউরোপে যুদ্ধের সতর্কবার্তা দিলেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ■ দক্ষিণ আফ্রিকায় ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশি নিহত ■ লিবিয়ায় জিম্মি চট্টগ্রামের ৪ যুবক, মুক্তিপণ দাবি ■ মেট্রোর ওপর দিয়ে টানা ক্যাবল সরানোর নির্দেশ ■ ছাত্র রাজনীতি ইস্যুতে ফের উত্তপ্ত বুয়েট ■ চট্টগ্রামে কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১০ ইউনিট ■ ‘ফাঁকা ঢাকায় সতর্ক থাকবে পুলিশ’
ঘুরে দাঁড়াচ্ছে গার্মেন্টস খাত
Published : Monday, 27 July, 2020 at 10:30 AM, Update: 27.07.2020 1:37:51 PM

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে গার্মেন্টস খাত

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে গার্মেন্টস খাত

বৈশ্বিত মহামারি করোনা ভাইরাসের ধকল কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেশের গার্মেন্টস শিল্প বা পোশাক খাত। বাতিল ও স্থগিত হওয়ার অর্ডার ধীরে ধীরে ফেরত আসতে শুরু করেছে। যদিও তা সক্ষমতার তুলনায় অনেকাংশেই কম।

অবশ্য ক্রয়াদেশ ফিরলেও রফতানি পণ্যের অর্থ পরিশোধে নানা শর্তজুড়ে দিচ্ছে কোনো কোনো ক্রেতা। আর প্রায় সব বড় বড় ক্রেতাই পোশাকের দাম আগের চেয়ে কম দিচ্ছেন। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অনেক গার্মেন্ট মালিক খরচ কমাতে শ্রমিক ছাঁটাই অব্যাহত রেখেছে।

পোশাক রফতানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শুধু এপ্রিল মাসেই গত অর্থবছরের তুলনায় রফতানি কমেছে ২২০ কোটি ডলার।

গত এপ্রিলে যেখানে রফতানি হয়েছিল ২৫৪ কোটি ডলারের পণ্য, সেখানে গত এপ্রিলে রফতানি হয় মাত্র ৩৭ কোটি ডলারের পণ্য। অবশ্য মার্চ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লকডাউন তুলে দেয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

ফলে মে ও জুন মাসে পোশাক রফতানি বেড়েছে। মে মাসে রফতানি হয় ১২৩ কোটি ডলারের পণ্য, আর জুনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২১২ কোটি ডলারে।

বিজিএমইএ’র তথ্য মতে, করোনা ভাইরাসের কারণে ৩ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারের আদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে।

এই ধাক্কা সামলাতে না পেরে শুধু বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত ৩৪৮টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। অবশ্য ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। প্রায় ৮০ শতাংশ অর্ডার ফেরত এসেছে। তবে ক্রেতারা অর্থ পরিশোধ পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে বিল পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি কারখানার ক্যাপাসিটি অনুযায়ী অর্ডার ও পোশাকের মূল্য কত কমেছে তা জানতে জরিপ চালায় বিজিএমইএ।

সদস্যভুক্ত ১০০ কারখানার তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত জরিপের ফলাফল গত শুক্রবার প্রকাশ করে সংগঠনটি। সেখানে দাবি করা হয়, করোনাভাইরাসের সুযোগে বিদেশি ক্রেতারা পোশাকের দাম গড়ে ১৪ শতাংশ কমিয়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে ছেলেদের অন্তর্বাসের ও ছোটদের পোশাকের। বিজিএমইএ’র জরিপের তথ্য মতে, গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি আইটেমের পোশাকের দাম ব্যাপক হারে কমিয়ে দিচ্ছে বিদেশি ক্রেতারা। প্রতি পিস শার্টের মূল্য কমেছে ১৬ শতাংশ।

আগে যে শার্টের জন্য ৪ ডলার ৮৭ সেন্ট মূল্য দিত ক্রেতারা, এখন সেই পণ্যের মূল্য দিচ্ছে ৪ ডলার ১০ সেন্ট। টি-শার্ট ও পোলো শার্টের দাম কমেছে ২১ শতাংশ। ২ ডলার ৮৬ সেন্টের পণ্যে ২ ডলার ২৫ সেন্ট দিচ্ছে। একইভাবে সব আইটেমের দাম কমানো হয়েছে।

ছোটদের পোশাকের দাম কমেছে ৩৫ শতাংশ, ডেনিম ট্রাউজারের ১০ শতাংশ, জ্যাকেট ১৪ শতাংশ, পুরুষের অন্তর্বাসে ৪৩ শতাংশ, সোয়েটারের ১৩ শতাংশ কমেছে।

অন্যদিকে বিজিএমইএ দাবি করছে, জরিপে অংশ নেয়া ১০০ কারখানা চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৬ কোটি ৫৭ লাখ পিস পোশাক তৈরির সক্ষমতা আছে। এখন পর্যন্ত তারা ১২ কোটি ৭৫ লাখ পিস পোশাকের ক্রয়াদেশ পেয়েছে।

তাতে ডিসেম্বর পর্যন্ত কারখানাগুলোর কাছে সক্ষমতার মাত্র ৩৫ শতাংশ অর্ডার রয়েছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে অর্ডার থাকলেও নভেম্বর ও ডিসেম্বর অর্ডার একেবারে নেই বললেই চলে।

এ বিষয়ে এফবিসিসিআই’র সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কিছু কিছু অর্ডার আসতে শুরু করেছে, এটা ঠিক। তবে গত বছর শীতের তুলনায় এবার অর্ডার অনেক কম। আর ক্রেতারা আগের মতো ১২০ দিনের লিড টাইমও দেয় না।

তাই আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বোঝা যাবে অর্ডারের প্রকৃত অবস্থা। কারণ আগস্টের অর্ডার অক্টোবর-নভেম্বরে শিপমেন্ট করা হবে। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্রেতা দাম অনেক কমিয়ে দিয়েছে। অচলাবস্থা পুরোপুরি না হলেও কিছুটা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই করা যাবে না।

শ্রমিক ছাঁটাই প্রসঙ্গে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গার্মেন্ট মালিক শ্রমিকদের বেতন দিতে না পারলে কী করবে? শ্রম আইন অনুযায়ী কারখানা বন্ধ বা শ্রমিক ছাঁটাই করছে কিনা সেটাই বিবেচ্য বিষয়। কারণ কোনো মালিক তো লোকসান দিয়ে কারখানা চালাবে না।

বিজিএমইএ’র জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, রফতানি অর্ডার ফিরছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। যেসব অর্ডার ক্রেতারা বাতিল করেছিল, এখন সেগুলোর শিপমেন্ট নিচ্ছে। সেপ্টেম্বরের আগে প্রকৃত অবস্থা বলা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি ক্রেতারা বলছে, নতুন অর্ডার নিতে চাইলে দাম কমাতে হবে। এটা দুঃখজনক। তবে তারা বলছে, পোশাকের বিক্রি বাড়াতে তাদের নানা ছাড় দিতে হচ্ছে। এ কারণে তারা কারখানাগুলোর সঙ্গে নতুন করে সমঝোতায় যাচ্ছে।

বিকেএমইএ’র জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, করোনার শুরুতে বাতিল হওয়া অর্ডার ফেরত আসায় গত এক-দুই মাস কারখানায় কাজ হয়েছে। আগামী ২ মাসের অর্ডার নেই, খুবই সামান্য। তাছাড়া ক্রেতারা নিট আইটেমের দাম ১৫ শতাংশ কমিয়েছে।

এ কারণে এখন অর্ডার নেয়া যাচ্ছে না। অক্টোবর নাগাদ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে পারে। শ্রমিক ছাঁটাই প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এখন চলমান কারখানায় কোনো শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে না। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে ভিন্ন কথা। শ্রমিক নেতারা কিসের ভিত্তিতে এসব কথা বলছে তা জানি না।

এদিকে করোনাকালে শ্রমিকদের কাজ হারানো নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)।

সম্প্রতি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু এপ্রিল-মে মাসে দেশের তৈরি পোশাক খাতের বড় সংগঠন বিজিএমইএ সদস্য এমন ৩৪৮টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এসব কারখানায় কাজ করতেন তিন লাখ ২৪ হাজার ৬৮৪ জন শ্রমিক।

এ বিষয়ে জাতীয় শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, এখন গার্মেন্ট মালিকরা অমানবিক আচরণ করছেন। ঠুকনো অজুহাতে শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। রোজার ঈদ থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৫০ হাজারের বেশি শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। যারা একটু অধিকার আদায়ে সোচ্চার তাদের বের করে দেয়া হচ্ছে।

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, মার্চ-এপ্রিলে যেসব অর্ডার বাতিল হয়েছে, সেগুলো আবার ফিরে এসেছে।

অথচ মহামারী ইস্যুকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের ঠকাতে লাগাতার ছাঁটাই করে যাচ্ছে গার্মেন্ট মালিকরা। একজন শ্রমিক ১৫-২০ বছর চাকরি করার কারণে আইন অনুযায়ী যে চাকরি সুবিধা পাওয়ার কথা এখন সেগুলো তাদের দেয়া হচ্ছে না। এই শ্রমিকই অন্য কারখানায় আরও কম মজুরিতে চাকরি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

দেশসংবাদ/জেএন/এফএইচ/mmh


আরও সংবাদ   বিষয়:  পোশাক   গার্মেন্টস   করোনা ভাইরাস  


আপনার মতামত দিন
স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thursday, 21 March, 2024
১৬০ টাকা কেজি দরে চিনি কিনছে সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
Wednesday, 20 March, 2024
দুই জেলায় গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক
Wednesday, 20 March, 2024
কমলো স্বর্ণের দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
Tuesday, 19 March, 2024
খেজুরের দাম বেঁধে দিল সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
Tuesday, 12 March, 2024
কমলো জ্বালানি তেলের দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thursday, 7 March, 2024
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক ও প্রকাশক
এম. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০/২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up