শিরোনাম: |
ঘরের চালা আছে তো বেড়া নেই। বেড়া আছে তো নেই দরজা। চালার টিনগুলো ভাঙা, বৃষ্টি এলেই পানি পড়ে। এখানকার বেশির ভাগ নলকূপ অকেজো। যেখানে-সেখানে নোংরা, আবর্জনা, মলমূত্র। নাজুক পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা। এরই মধ্যে কোনো রকমে মাথা গুঁজে জীবন কাটিয়ে দেওয়া। এটি বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের পেঁচিবাড়ি আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবন চিত্র।
জানা গেছে, ২০০২ সালে পেঁচিবাড়ি বাঙালী নদীর তীরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় বসবাসের জন্য ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। সিমেন্টের খুটির ওপর টিনের চালা ও বেড়া দিয়ে তৈরী হয় ৭টি ব্যারাক। ব্যারাকের একটি কক্ষ একটি পরিবারের নামে বরাদ্দ হয়। প্রত্যেক ব্যারাকে দশটি কক্ষ, একটি নলকুপ ও তিনকক্ষ বিশিষ্ট বাথরুম-টয়লেট রয়েছে। প্রথমে সত্তরটি পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাই হয়েছিল।
এখানে নিরাপদে বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে জরিনা বেগম বসবাস শুরু করেছিলেন। সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া তার ঘরটি এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু জরিনা বেগম নয়, তার মতই আশ্রিতরা র্দীঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কিন্ত মেরামতের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না প্রশাসন। এ কারণে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে চলে গেছেন অন্যত্র। বাধ্য হয়ে যারা এখানে বসবাস করছেন তাদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
এখানকার বাসিন্দারা জানান, ঘরগুলো দীর্ঘ সময়ে সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়নি। চালের টিন মরিচা ধরে ঝরে পড়েছে। বৃষ্টি নামলেই চালের ফুটো দিয়ে পানি পড়ে। রাতে আকাশে মেঘ দেখলেই কষ্ট বেড়ে যায়। মাথার ওপর পলিথিন দিয়ে কুকড়ি হয়ে বসে নির্ঘুম রাত কাটায়। বাথরুম-টয়লেট গুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের শুরুতে মাটির কাজ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আর মাটি ফেলা হয়নি। ফলে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বাঙালী নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে এই গ্রামটি।
এ সব সমস্যার বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অনেকেই আবাসস্থল ছেড়ে চলে গেছেন। ভুক্তভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে জরুরি ভিত্তিতে বসবাস অযোগ্য আশ্রয়ণ প্রকল্প মেরামতের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রুবেল আহম্মেদ বাবু বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলো সংস্কারের জন্য ইউপি চেয়রম্যানের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদ বরাবর কয়েক দফা আবেদন করে কোন কাজ হয়নি।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত জানান, এই কর্মস্থলে নতুন যোগদান করেছি। তবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোর এমন সমস্যার কথা কেউ আমাকে বলেনি। তারপরও খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশসংবাদ/প্রতিনিধি/এনকে
আপনার মতামত দিন
|