শিরোনাম: |
নেত্রকোনার আটপাড়ায় গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়ে মামলার দায়িত্বভার উচ্চতর তদন্তকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তরের দাবি করছে তার পরিবারের সদস্যরা। মৃতের ভাই মামলার বাদী উপজেলার স্বরমশিয়া ইউনিয়নের স্বরমশিয়া গ্রামের আল আমীন গত ২৫ আগষ্ট পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত আবেদন করেন।
অভিযোগে জানা গেছে,জেলার আটপাড়ার স্বরমশিয়া গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে জহিরুল ইসলাম পিন্টুর সাথে প্রায় ৬ বছর আগে উপজেলার নবাবপুর গ্রামের দেওয়ান আলীর মেয়ে স্বপ্না আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর তাদের সংসার ভালই চলছিল। এর পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বপ্নার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। স্বামী জহিরুল ইসলাম ও পরিবারের অন্যরা তাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। গত ১ মে স্বপ্না আক্তার অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। স্বামী ও অন্যরা তাকে আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠান। পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে শনিবার ভোরে মারা যান স্বপ্না।
ময়না তদন্ত শেষে ওইদিন রাতে স্বামীর বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতিতে মৃতের স্বজনদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জানাজা শেষে লাশ দাফনের চেষ্টা করা হয়। পরে রাত ৯টার দিকে গৃহবধূর বাবার বাড়ি নবাবপুর থেকে লোকজন এসে লাশ নিয়ে যায় এবং নবাবপুর গ্রামে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
পরদিন গৃহবধূর ভাই আল আমীন বাদী হয়ে স্বামী জহিরুল ইসলাম পিন্টু, শশুর জজ মিয়া, শাশুড়ি দিনা আক্তারসহ আটজনের বিরুদ্ধে আটপাড়া থানায় ৩০৬ ধারায় হত্যা মামলা করতে যান। থানা পুলিশ প্রথমে ওই মামলা নেয়নি। পরে এলাকাবাসীর চাপে ও সহকারী পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলা গ্রহন করা হয়। আরো অভিযোগ আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বাদীর হাতের লেখা তথ্য পরিবর্তন করে এজাহারে উল্লেখ করেন। এতে করে বাদী ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মামলা দায়েরের পর থেকে পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার এমনকি জিজ্ঞাসাবাদের কোন চেষ্টা করেনি। আসামিরা এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে পুলিশ তদন্ত শেলে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করবে। বাদী ন্যায় বিচার পাওয়ার স্বার্থে ও গৃহবধূর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে উর্ধতন তদন্তকারী অন্য কোন সংস্থার ওপর দায়িত্বভার অর্পণের দাবি জানান।
বাদী আল আমীন বলেন,ওরা আমার বোনকে বিষখাইয়ে হত্যা করেছে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল। পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে চায়নি। পরে পুলিশ সুপারকে জানালে মামলা নেয়া হয়। আমি ও আমার পরিবার এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন,আটপাড়ায় গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়ে অন্য তদন্তকারী সংস্থার ওপর মামলাটির দায়িত্বভার অর্পণের বিষয়ে আমি দরখাস্ত পেয়েছি। বাদী চাইলে সিআইডি অথবা তাদের পছন্দের অন্য কোন তদন্ত সংস্থার নিকট মামলাটি হস্তান্তর করা যেতে পারে।
দেশসংবাদ/প্রতিনিধি/এফএইচ/mmh
আপনার মতামত দিন
|