যুদ্ধবিরতি শেষে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সাতদিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) হামলা শুরুর প্রথম তিন ঘণ্টায় ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, হামাস চুক্তির শর্ত মানেনি। যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত ছিল যে নিজেদের মধ্যে থাকা জিম্মিদের মধ্যে সব নারীকে তারা মুক্তি দেবে; কিন্তু হামাস তা করেনি। উপরন্তু আজ শুক্রবার ইসরায়েলের নাগরিকদের লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলে বাহিনী ফের সংঘাতে ফিরে এসেছে এবং ইসরায়েলের সরকারের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই, ৩টি লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা যুদ্ধ করছি— হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্ত করা, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা এবং ভবিষ্যতে গাজা উপত্যকা যেন আর ইসরায়েলের নাগরিকদের জন্য হুমকি হয়ে না উঠতে পারে— তা নিশ্চিত করা।
টানা ছয় সপ্তাহ সংঘর্ষের পর সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েল। প্রথমে ৪ দিন বিরতি দিয়ে বন্দী বিনিময় চুক্তি হলেও পরে তা দুই দফায় আরও ৩ দিন বাড়ানো হয়। তবে নতুন করে সময়সীমা বৃদ্ধি না হওয়ায়- এক সপ্তাহ পর আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যায়। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে আবারও লড়াই শুরু হয়।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) দাবি, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে গাজা থেকে একটি রকেট ছোড়া হয়। এ ঘটনার পর এক তাৎক্ষণিক বিবৃতিতে গাজায় ফের অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয় আইডিএফ।
তবে গাজার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সকাল থেকেই উত্তরাঞ্চলে গোলাগুলি এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইসরায়েল হুমকি দিয়ে আসছিল, যতদিন হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া অব্যাহত রাখবে; ততদিন যুদ্ধবিরতি চলবে। নয়ত আগের মতো আবার তাদের হামলা শুরু হবে। তবে আজ শুক্রবারের জন্য কোনো জিম্মির তালিকা দেয়নি হামাস। তা সত্ত্বেও আশা করা হচ্ছিল, শেষ মুহূর্তে গিয়ে হয়ত যুদ্ধবিরতির সময় বাড়বে।
নতুন করে মেয়াদ বৃদ্ধি না হওয়ায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গাজায় বিমান হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
হামাস দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর তারা ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের কয়েকটি শহরে রকেট হামলা চালানোর দাবিও করেছে তারা।
উল্লেখ্য, হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে এক নজিরবিহীন হামলা চালায়। জবাবে ওইদিনই পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের সরকারি তথ্যমতে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। যাদের মধ্যে ৬ হাজার ১৫০ জন শিশু এবং ৪ হাজার নারী রয়েছেন।সূত্র: বিবিসি