শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই রায়কে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
এই রায়কে ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’ বলে আখ্যা দিয়ে সংস্থাটি জানিয়েছে, ড. ইউনূসের বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আদালতের দেয়া রায়ের পর নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়ার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার ঢাকার শ্রম আদালত ৮৩ বছর বয়সী নোবেলজয়ী মোহাম্মদ ইউনূস ও তার তিন সহকর্মীকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর আওতায় দোষী সাব্যস্ত করে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
ইউনূসের এই দোষী সাব্যস্ত করার বিষয়টি বাংলাদেশের মানবাধিকারের প্রতিরূপ, যেখানে কর্তৃপক্ষ স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে এবং সমালোচকদের ‘পিষে বুলডোজ’ করেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে অস্বাভাবিক গতির বিচার সম্পন্ন হয়েছে, তা বাংলাদেশের অন্যান্য শ্রম অধিকার সংক্রান্ত আদালতে ‘শামুক-প্রগতিশীল’ অগ্রগতির একেবারে বিপরীত। শ্রমিক আইনের অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক ভেন্ডেটাস সমাধানে বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বাস করে যে, ইউনূস এবং তার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে সিভিল ও প্রশাসনিক অঙ্গনের বিষয়গুলোর জন্য ফৌজদারি মামলা শুরু করা শ্রম আইন এবং বিচার ব্যবস্থার একটি নিখুঁত অপব্যবহার। পাশাপাশি তার কাজ এবং মতবিরোধের জন্য রাজনৈতিক প্রতিশোধ।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। পরে অবশ্য আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ আসামিদের এক মাসের জামিন দেয়া হয়েছে।