নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে না বলে সাইকেল নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুরুতর আহত কামরুল ইসলাম (২৫) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মারা গেছেন। মারা যাওয়া কামরুল ইসলাম মোহনগঞ্জ উপজেলার মাঘান-সিয়াধার ইউনিয়নের সিয়াধার গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার মাঘান সিয়াধার ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মানিক (১৮) রবিবার দুপুরে রামপাশা গ্রাম সংলগ্ন খুরশিমূল বাজারের একটি দোকানের সামনে তার বাই সাইকেলটি রেখে বাড়িতে যায়। এ সময় তারই সহপাঠী পাশ্ববর্তী সিয়াধার গ্রামের শাহ্জাহান মিয়ার ছেলে ও খুরশিমূল উচ্চ বিদ্যালয়ের এস এস সি পরীক্ষার্থী ওয়াকিব (১৭) জরুরী কাজে মানিকের কাছে না বলেই সে তার বাই সাইকেলটি নিয়ে মোহনগঞ্জে চলে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর মানিক বাড়ি থেকে ওই দোকানের সামনে এসে দেখে তার বাই সাইকেলটি সেখানে নেই। সে তাৎক্ষনিক দোকানদার ও আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি বাজারে বাই সাইকেলটি খোঁজাখুজি করতে থাকে। ঘন্টাখানেক পর ওয়াকিব বাই সাইকেলটি নিয়ে বাজারে ফিরে এসে মানিককে বুঝিয়ে দিতে যায়। কাউকে না জানিয়ে তার বাই সাইকেলটি নিয়ে যাওয়ায় মানিক ক্ষিপ্ত হয়ে তার সহপাঠী ওয়াকিবকে বকাঝকা করায় এ নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন ঝগড়া থামিয়ে দুজনকেই নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
এরই জের ধরে সোমবার দুপুরে সিয়াধার ও রামপাশা গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন গুরুতর আহত হয়। আহতদেরকে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে আশংকাজনক অবস্থায় কামরুল ইসলাম (২৫), হীরা মিয়া (২০) ও শাহীন আলম (২২) নামক তিন জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দীর্ঘ ২৪ ঘন্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে কামরুল ইসলাম মারা যায়। এদিকে কামরুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সিয়াধার গ্রামবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে দুপুরের দিকে খুরশিমুল বাজারে চার-পাঁচটি দোকানে হামলা চালায়। রামপাশা গ্রামবাসীর অভিযোগ সিয়াধার গ্রামের লোকজন তাদের দোকানপাঠে হামলা চালিয়ে মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ মনির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত কামরুল ইসলামের মামা মোঃ রুকন উদ্দিন বাদি হয়ে রামপাশা গ্রামের ৪১ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোহনগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উপদেষ্টা সম্পাদক ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা এনামুল হক ভূঁইয়া ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : এম. এ হান্নান যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ রুবাইয়াত আনোয়ার মেবিন হাসান