বৈরী আবহাওয়ার কারনে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদী থেকে মাছ ধরতে না পারায় কর্মহীন হয়ে হতদরিদ্র মৎস্যজীবি পরিবারের লোকজন দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে বহমান যমুনা নদী। যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে ৪৪ বছরে হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বসত বাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়ে তারা আজ নিঃস্ব। অনেকে মাতৃভূমির মায়া ত্যাগ করে এলাকা ছেড়ে শহর কিংবা অন্যত্র চলে গেছে। অনেক পরিবারের লোকজন নাড়ীর টানে চর এলাকায় কিংবা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এসব আশ্রিত অধিকাংশ পরিবারের লোকজন যমুনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে।
শৈত্য প্রবাহের কারণে কয়েক দিন ধরে সূর্য্যরে দেখা মিলছে না। কুয়াশার বৃষ্টি ঝরছে। কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বের হচ্ছে না। টানা শৈত্যপ্রবাহে যমুনা নদীতে মাছ শিকারিদের দূর্ভোগ বেড়েছে। সূর্য্যরে আলোবিহীন দিন আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে রাত। বৈরি পরিবেশে যমুনা পাড়ের মাছ শিকারিদের কষ্টের যেন শেষ নেই।
জেলেরা সারা রাত নদীর বুকে নৌকা বয়ে তারা জাল দিয়ে বিভিন্ন জাতের মাছ ধরে। সকাল হওয়ার সাথে ওই মাছ নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারি আড়তে নিয়ে যায়। মাছ বিক্রির টাকায় চলে ওদের সংসার। হাঁসি খুশি ভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে স্বচ্ছলভাবে দিন কাটতো তাদের।
কিন্তু প্রকৃতির এই বৈরী আচরনে জেলেদের মুখে নেই হাসি। পরিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন মহা সংকটে। কিভাবে চলবে তাদের সংসার । এদিকে নেই কোন সরকারী বেসরকারী অনুদানও। কোন কারনে মাছ ধরতে না পারলে সেদিন ওদের উপোষ থাকতে হয়। যমুনা তীরের মৎস্যজীবি প্রায় ৩০০ পরিবারে নিত্য দিনের এমন চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাছ শিকারিদের নৌকাগুলো শহড়াবাড়ি ঘাটে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। কুয়াশার কারনে রাতের বেলায় নদীতে নৌকা চালানো যায় না। মাছ শিকারিরা নদীর গতিপথ ও দিক নির্নয় করতে পারছে না। ফলে নদী থেকে মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। যমুনা নদীর ঘাটে নৌকা রেখে তারা দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
মৎস্যশিকারি বৈশাখী চরের মোকছেদ আলী, বানিয়াজানের কান্তি হাওয়ালদার, ভান্ডারবাড়ির নায়েব আলী জানায়, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারনে তারা কয়েক দিন ধরে নদী থেকে মাছ ধরতে পারছে না। অলস সময় পার করছে। ফলে তারা খুবই অভাবে পড়েছে। ঋণের টাকায় সংসার চালাতে হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা অতিকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
উপজেলার গোসাইবাড়ি বাজরের পাইকারি আড়তদার নিতাই চন্দ্র হাওয়ালদার জানায়, বৈরী আবহাওয়ার কারনে জেলেদের পক্ষে নদী থেকে মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাজারে মাছের আমদানীও কমে গেছে।
উপদেষ্টা সম্পাদক ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা এনামুল হক ভূঁইয়া ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : এম. এ হান্নান যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ রুবাইয়াত আনোয়ার মেবিন হাসান