ফাতেমার পিতা শাহিনুর রহমান ও মাতা ডলি খাতুন জানান, ফাতেমা খাতুন পুলুম বাজারের সিরাজ মার্কেটের তৃতীয় তলায় মা ফাতিমা মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। এক মাস আগে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক হুমায়ারা খাতুন তাকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে মাথা ধরে দেয়ালে প্রচন্ড আঘাত করে। এতে সে জ্ঞান হারায়। প্রায় এক ঘন্টা মাথায় পানি দেয়ার পর তার জ্ঞান ফেরে। এরপর তাকে বাড়িতে আনা হয়।
তখন থেকে সে ভুল বকতে থাকে। মাদ্রাসার শিক্ষক আলমগীর হুসাইন বিষয়টি জানতে পেরে তাকে জীন লেগেছে বলে বিভিন্ন দোয়া কালাম পড়ে ফু দিয়ে দেন। তাতেও কাজ না হলে তিনি চৌগাছা এবং ঝিকরগাছার কয়েকজন ফকিরের কাছে পাঠান। দিন দিন অবস্থা খারাপ হতে থাকলে মাদ্রাসা থেকে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে দেন। বিভিন্ন জায়গায় কবিরাজ, ফকির দেখানোর পর ফের তাকে ওই মাদ্রাসায় পাঠানো হয়। অবস্থার এক পর্যায়ে খারাপ হওয়ায় রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফাতেমার মা ডলি বেগম জানান, ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ানো হলেও দিনে রাতে কখনো ঘুম পড়ছে না। এক জায়গায় থাকছে না। হাসপাতালে সর্বত্রই ছুটে বেড়াচ্ছে।
যশোর মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুর রহমান (মানুষিক রোগ বিশেষজ্ঞ) সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, শিশুটির বর্তমানে মানুষিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে তার কি অবস্থা।
মা ফাতিমা মাদ্রাসার শিক্ষক আলমগীর হুসাইন জানান, আগে থেকে ফাতিমার এরকম অবস্থা রয়েছে। তাকে মাথায় কোন প্রকার আঘাত করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষাবোর্ডের রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে কওমী মাদ্রাসা হিসেবে গত বছর থেকে এ মাদ্রাসা চালু করা হয়েছে।
শিক্ষক হুমায়রা খাতুনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে অপর শিক্ষক আলমগীর হোসেন শিক্ষক হুমায়রা খাতুনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ফাতেমার ঘাড়ে জীন আছে। তাই ওরকম করছে। তাকে কোন আঘাত করা হয়নি।
ফাতেমার পিতা শাহিনুর রহমান ও মাতা ডলি খাতুন জানান, মেয়েটির অবস্থা একটু ভাল হলে মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হবে।
ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) সাধন কুমার বিশ্বাস জানান, বিষয়টি জানা নেই। যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপদেষ্টা সম্পাদক ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা এনামুল হক ভূঁইয়া ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : এম. এ হান্নান যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ রুবাইয়াত আনোয়ার মেবিন হাসান