Published : Monday, 15 April, 2024 at 4:42 PM, Update: 15.04.2024 5:03:59 PM
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) প্রিজন সেলে এক আসামিকে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত করে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় বলেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বরখাস্ত কারারক্ষীরা হলেন–সহকারী প্রধান কারারক্ষী সুমন চন্দ্র দে, কারারক্ষী কামরুল আহসান ও আব্দুর রব।
এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল মারুফকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্যরা হলেন–শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রেজওয়ানুল আলম ও কোতোয়ালী মডেল থানার সহকারী কমিশনার নাফিছুর রহমান।
গতকাল রোববার ভোরে শেবাচিম হাসপাতালের নিচতলার প্রিজন সেলে দুই আসামিকে বেধড়ক পেটান আরেক আসামি। পরে আহতদের চতুর্থ তলার সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর একটায় একজনের মৃত্যু হয়।
নিহত মো. মোতাহার (৬৭) বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার কাউনিয়া গ্রামের রফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি বরগুনার একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। এ ছাড়া আহত অপর আসামি অজিত মন্ডল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানায়, হামলাকারী তরিকুল ইসলাম (২৫) পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। তিনি পটুয়াখালীর একটি হত্যা মামলার আসামি।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, প্রিজন সেলের দায়িত্বে এক নায়েক ও দুই কনস্টেবল ছিলেন। মানসিক রোগীসহ তিনজন প্রিজন সেলের একটি কক্ষে ছিলেন। ভোরে আকস্মিকভাবে মানসিক রোগী অপর দুই আসামিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ট্যান্ড দিয়ে বেধড়কভাবে পেটাতে থাকেন। এতে মোতাহারের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। অজিত আঘাত পেলেও ততটা গুরুতর নয়। ঘটনার সময় সেলের তালার চাবি নিয়ে একজন বাইরে নাস্তা করতে গিয়েছিলেন। তাই দায়িত্বরতরা দ্রুত প্রিজন সেলে ঢুকতে পারেননি।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন মানসিক রোগী ওই আসামি অপর দুই আসামিকে স্যালাইনের স্টিলের স্ট্যান্ড দিয়ে পেটান। এতে দুজন আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়।
তবে নিহতের স্বজনেরা পুরো ঘটনাকে পরিকল্পিত দাবি করে হত্যাকারীর শাস্তি দাবি করেছেন।