মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। আকস্মিক এই হামলার পর বিশ্ববাজারে বেড়ে গেছে জ্বালানি তেলের দাম। ধারণা করা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে আরও বৃহৎ সংঘাত এবং চলমান উত্তেজনার কারণে তেল সরবরাহে বিঘ্নিত হওয়ার শংকায় এ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বুধবার প্রতি ব্যারেল ( এক ব্যারেল=১৫৯ লিটার) ব্রেন্ট ক্রুড বিক্রি হয়েছে ৭৪ দশমিক ২১ এক ডলারে। আগের দিন মঙ্গলবারের চেয়ে এই মূল্য ২ দশমিক ৫২ ডলার বা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
আর একই দিন অপরিশোধিত জ্বালনি তেলের অপর বেঞ্চমার্ক ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয়েছে ৭০ দশমিক ৫৮ ডলারে। আগের দিন মঙ্গলবারের চেয়ে এই মূল্য ২ দশমিক ৪১ ডলার বা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
উভয় বেঞ্চমার্কের মূল্যবৃদ্ধির হার যোগ করলে দেখা যায়, সার্বিকভাবে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ।
এর আগে প্রায় দু’সপ্তাহ অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারে মন্দাভাব ছিল। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে সম্প্রতি অস্থিরতা শুরু হওয়ার প্রভাব পড়েছে তেলের বাজারে। বিশেষ করে গতকাল রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে এমন ধারণা দানা বাঁধছে যে যে কোনো সময় মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে এবং তারই প্রভাব পড়েছে তেলের বাজারে।
জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষণকারী সংস্থা পিভিএমের বিশ্লেষক টমাস ভার্গা রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, গত বেশ কয়েক মাস ধরে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে তেলবাহী ট্যাংকার জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলার প্রভাব তেলের বাজারে পড়ছে সত্য, তবে সেটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তবে গতকাল যা হলো…ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে যদি সত্যিই যুদ্ধ বেঁধে যায়, তাহলে তা কেবল এই দু’দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে প্রথমেই আক্রান্ত হবে সেখানকার তেলক্ষেত্রগুলো এবং বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়বে হু হু করে। তাই এই মুহূর্তে আমরা সত্যিকার অর্থেই বাজার অস্থিরতাজনিত ভীতিতে রয়েছি।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের একটি বড় অংশই আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। এই অঞ্চলের নেতৃস্থানীয় দেশ সৌদি আরব বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল রপ্তানিকারী।