Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ উৎপাদনে যাচ্ছে ৯ চিনিকল ■ সারাদেশে ডেঙ্গুতে আরো ৫ মৃত্যু, হাসপাতালে ১১৯৪ ■ বিকালে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ■ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আটক সাবেক এমপি ■ সেঞ্চুরির আক্ষেপ মাহমুদউল্লাহর, লড়াকু পুঁজি বাংলাদেশের ■ হঠাৎ পুলিশে বড় রদবদল ■ রেললাইনে বসে গল্প, কাটা পড়লেন ৪ জন
শব্দদূষণে বাসা বাঁধছে যেসব কঠিন রোগ
Published : Friday, 11 October, 2024 at 11:48 AM

শব্দদূষণ

শব্দদূষণ

শব্দদূষণের মূল উৎস হলো যানবাহন, ট্রেন, প্লেন, মিউজিক সিস্টেম, বাজি ফোটানো, মাইকিং ইত্যাদি। শব্দদূষণ বলতে এমন একটি শব্দকে বোঝায় যা বিরক্তিকর। শব্দকে প্রধানত একটি দূষক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ এটি শ্রবণের স্বাভাবিক প্রবাহ বা স্বাভাবিক শ্রবণশক্তিকে ব্যাহত করে। শব্দদূষণ শুধু বিরক্তির কারণই নয় বরং শারীরিক বিভিন্ন ব্যাধিরও মূল কারণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শব্দদূষণের কারণে দীর্ঘস্থায়ী ও কঠিন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুসন্ধান অনুসারে, বায়ু দূষণের (কণা পদার্থ) প্রভাবের পরেই শব্দদূষণ স্বাস্থ্য সমস্যার দ্বিতীয় বৃহত্তম পরিবেশগত কারণ।

যেসব রোগের ঝুঁকি বাড়ায় শব্দদূষণ—

শ্রবণ সমস্যা: মানুষের যে পাঁচটি ইন্দ্রিয় আছে তার একটি হলো শ্রবণশক্তি। যে কোনো মানুষের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হলো কান। তবে কান যতটা শব্দ তরঙ্গ গ্রহণ করতে পারে, তার চেয়ে বেশি হলেই যত সমস্যা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ শব্দ কানে বাজলে এক সময় শ্রবণ ক্ষমতা কমতে শুরু করে। ৮৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দকে দূষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ও এর চেয়ে বেশি শব্দ শ্রবণ ক্ষমতা কমায়।

ঝালাপালা শব্দ: ধীরে ধীরে শব্দদূষণের শিকার আমরা প্রত্যেকেই। নগর জীবনের নানান শব্দ আমাদের কান ঝালাপালা করছে। ধীরে ধীরে ধ্বংস করছে কানের ভেতরের ইন্দ্রিয়। চিকিত্সা বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের কানের ভেতরে বা অন্তকর্ণে ১৬ হাজার সেল বা কোষ থাকে। এগুলো মস্তিষ্কে শব্দের অনুভূতি জাগায়। প্রতিনিয়ত এ কোষগুলোই মারা যাচ্ছে উচ্চ শব্দ সইতে না পেরে। এবার ধরা যাক, জীবজন্তুর গর্জন, চিত্কার, মানুষের চিত্কার, গাড়ির হর্ন, গিটার বা বাঁশির শব্দ, ঢোল-ঢাকের বাদ্যবাজনা, অডিও ইত্যাদির কথা। এসবই উচ্চগ্রামের শব্দ কম্পাংক তোলে। এসব শব্দের আঘাতে আমাদের কান থেকে রক্তপাত দৃশ্যমান হয় না বটে; কিন্তু শ্রবণ ইন্দ্রিয় ধ্বংস হয় খুবই নীরবে।

টিনিটাস: কানের মধ্যে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়ার সমস্যাকে টিনিটাস বলা হয়। এ সমস্যা খুবই বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। অত্যধিক শব্দ কানে বাজার কারণে টিনিটাস হতে পারে। টিনিটাসে আক্রান্ত ৫০-৯০ শতাংশ রোগী শব্দদূষণের কারণে এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আবার কিছু মানুষের মধ্যে টিনিটাস ঘুমের ব্যাঘাত, জ্ঞানীয় প্রভাব, উদ্বেগ, মানসিক যন্ত্রণা, বিষণ্নতা, যোগাযোগের সমস্যা, হতাশা, বিরক্তি, উত্তেজনা, কাজ করতে অক্ষমতা, কর্মক্ষমতা হ্রাস ও সামাজিক জীবনে সীমিত অংশগ্রহণের কারণেও হতে পারে।

ঘুমাতে অসুবিধা: প্রচণ্ড শব্দ মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবের কারণে ঘুমকে বাঁধা দিতে পারে। আশপাশে আওয়াজ হলে শান্তির ঘুম নষ্ট হতে পারে। ফলে মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। শব্দদূষণের কারণে ঘুম কমে যায় ও মানসিক অস্থিরতা বেড়ে যায়। ফলে অস্বস্তি, ক্লান্তি ও মেজাজে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

জ্ঞানীয় কার্যকারিতা কমে যায়: কান মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত, যা শরীরের উদ্দীপনা প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করে। এ কারণে কানে আঘাত করা সব শব্দ তরঙ্গ ব্যাখ্যার জন্য মস্তিষ্কে পাঠানো হয়। এর মানে হলো অত্যধিক শব্দও মস্তিষ্কে যায় ও বৈজ্ঞানিক রিপোর্ট অনুসারে, এই ধরনের শব্দ মস্তিষ্ককে নিস্তেজ করে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমতে শুরু করে। নিরিবিলি পরিবেশে বসবাসকারীদের চেয়ে যারা কোলাহলপূর্ণ এলাকায় বাস করেন (যেমন- ব্যস্ত হাইওয়ে, রেললাইন, বিমানবন্দর বা উচ্চ শব্দে নাইট ক্লাবের কাছাকাছি) তাদের জ্ঞানীয় শক্তি কম থাকে।

কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা: অতিরিক্ত শব্দ হৃদযন্ত্রকে ‘উত্তেজিত’ করে তোলে। অত্যধিক শব্দের কারণে হৃৎপিণ্ডও বিরক্ত, দ্রুত স্পন্দিত ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। উচ্চ শব্দে অ্যাড্রেনালিন ও কর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোনও নিঃসৃত হয়। তাই কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে থাকলে রক্তচাপও বেড়ে যায়। যদি রক্তচাপ ক্রমাগত বাড়তে থাকে, তবে এটি উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের মতো হৃদরোগ সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগের মধ্যে আছে উচ্চ রক্তচাপ ও আর্টেরিওলোস্ক্লেরোসিস, যা রক্তনালিগুলোর সংকোচনের কারণে ঘটে।

আবেগ ও আচরণগত পরিবর্তন: অত্যধিক শব্দ বিরক্তি বা ক্রোধের কারণ হতে পারে। যারা বেশিক্ষণ তীব্র শব্দের মধ্যে থাকেন তারা ক্রমাগত মাথাব্যথার সমস্যায় ভোগেন। এটি মানসিক চাপের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে উদ্বেগ বাড়ে ও আচরণগত পরিবর্তন দেখা দেয়।

প্রজনন সমস্যা: অবাক করা হলেও সত্যিই যে, প্রজনন স্বাস্থ্যের উপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে শব্দদূষণ। এ বিষয়ে বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষা করেছেন গবেষকরা। আর বেশিরভাগই জানান দিচ্ছে, নারী এমনকি পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে শব্দদূষণ। এমনকি গর্ভবতী নারীরা যদি অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে থাকেন, তাহলে তাদের এমনকি গর্ভের সন্তানের ওজন কমতে থাকে। তাই উচ্চ শব্দ এড়িয়ে চলতে হবে সবাইকে ও শব্দদূষণ প্রতিরোধে সবাইকে নিজ নিজ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

শব্দদূষণ এড়াবেন কিভাবে—
যেখানেই থাকুন, যে অবস্থাতেই থাকুন শব্দ আপনার কানের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। এজন্য বাস্তব কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এক জোড়া ইয়ার প্লাগ কিনতে পারেন। পকেটে ইয়ারপ্লাগ রাখুন। অবস্থা দেখে ব্যবস্থা নিন। মনে রাখবেন উচ্চ শব্দ এড়াতে ফোম সিলিকন, মোম, এসব কোনো কাজে আসে না। আর হ্যাঁ। কানে কখনো তুলো দেবেন না। তুলো শব্দ প্রতিরোধ করে না। যদি প্লাগ ব্যবহার করেও বাড়তি শব্দ নিয়ন্ত্রণ না হয়, তাহলে আপনার কান দু’টো বিশেষজ্ঞ চিকিত্সককে দেখান, পরীক্ষা করান। এছাড়া যেখানে উচ্চগ্রাম শব্দ হচ্ছে, সেখান থেকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ান। স্টেডিয়ামে হই চই-এর মধ্যে খেলা দেখলেন ভালো কথা। বাসায় এসে অমনি মিউজিক শুনবেন না। মাঝখানে বিরতি দেবেন। তা না হলে এসময় শিশুর ইলেকট্রিক গিটারের শব্দও মারাত্মক ক্ষতি করে। মনে রাখবেন, কান একবার বধির হলে কোনোমতেই ঠিকঠাক মতো আর ফিরে পাওয়া যায় না। বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন শ্রবণযন্ত্র খুব একটা কাজ দেয় না। তাই প্রয়োজনে যখনই অডিও শুনবেন, ভলিউম এডজাস্ট করে শুনুন। কান মূল্যবান ইন্দ্রিয়। একবার বধির হলে আর রক্ষা নেই।

দেশসংবাদ/এমএইচ/এমএটি


আপনার মতামত দিন
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
Friday, 8 November, 2024
সাত দিনে ডেঙ্গুতে ৪০ মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thursday, 7 November, 2024
ডেঙ্গু কাড়লো আরও ৬ প্রাণ, নতুন রোগী ১২৯৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
Monday, 4 November, 2024
১৪ হাসপাতালের নাম পরিবর্তন
নিজস্ব প্রতিবেদক
Sunday, 3 November, 2024
ডেঙ্গুতে একদিনে ১০ মৃত্যুর রেকর্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
Saturday, 2 November, 2024
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক
এফ. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up